অনন্ত সেলিম, জেলা প্রতিনিধি, বগুড়া।
বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে প্রতিবছর শেষ বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।যার ধারাবাহিকতায় আসছে আগামী ৮ই মে২০২৫ইং রোজ বৃহস্পতিবার শাহ্ সূফি হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রঃ) এর স্মরণে বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এই মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশর বিভিন্ন জেলা সহ বিদেশ থেকেও চলে আসা ভক্তগণের বিশাল এক মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয় এই মেলাকে কেন্দ্র করেই। মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিরে মহাস্থানের আশে পাশে গ্রাম গুলোতে আত্মীয় স্বজনরা ভির জমাতে থাকে। ইতিমধ্যে এই মিলন মেলাকে ঘিরে ফকির সন্ন্যাসীরাও আসা শুরু করেছে।
মেলাকে ঘির কিছু সাধুর ভিরে অসাধুর আগমনে নেশা,নারী, তাসের মত খারাপ বিষয় গুলোকে যোগ করে এবং এলাকায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে । প্রশাসন ও এলাকার মানুষ সদা সর্বদা সোচ্চার থাকলেও তাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে চলে গাঁজার মত নেশা দ্রব্যের। অনেকেই এই মেলাকে গাঞ্জা খাওয়ার মেলা বলে অভিহিত করে থাকেন। এমন মন্তব্যের জেরে স্বানীয় প্রশাসনের সাথে কাজ করবে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউ এন ও) জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন বৈশাখী মেলার নামে উড়বেনা গাঁজার ধোঁয়া, চলবেনা অশ্লীল কার্যকলাপ। এইবার মেলার চিত্র হবে গত বছর গুলোতে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোর চেয়ে আলাদা কারণ প্রতিবছরের ন্যায় এই মেলায় চলতে দেওয়া হবে না মাদক, চলবে না অশ্লীল কোন কাজ, উড়বে না গাঁজার মত নেশার সাদা ধোঁয়া। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনি আরও বলেন আজ থেকেই এই এলাকা গুলো কড়া নজরে রাখবে পুলিশ থাকবে তিন স্তরের প্রশাসন। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাক ধারী পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, সহ প্রয়োজনে আরও অন্যান্য বাহিনী।
“বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় কটকটির জন্য বিখ্যাত” মেলার বিখ্যাত এই ঐতিহ্যবাহী ‘কটকটি’ সহ হরেক রকমের খাবার, খেলনা, কাঠের জিনিস, স্টিলের জিনিস সহ পাওয়া যায় মাটির তৈরি জিনিসপত্র বাসন কোসন। পাশাপাশি পাওয়া যায় ছোট বাচ্চাদের খেলাধুলা করার খেলনা সামগ্রী।এই মেলাকে ঘিরে মেলায় আসা ব্যক্তিরা সাধু সন্ন্যাসীদের আসরে বসে গাঁজা সেবন করেন এমনকি মেলার মধ্যে বা রাস্তাঘাটে চটের বস্তা বিছিয়ে গাঁজা ক্রয় বিক্রয় ও সেবন করে থাকেন। মেলার এই সময়কে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে ব্যস্ত বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিনে দুপুরে খোলা মাঠে মাদক বিক্রি করে থাকেন তারা। তবে এইবার সেটা করতে দিবে না বলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন স্থানীয় প্রশাসন মহোদয়।
প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়েও যদি কেউ এই ধরনের মাদক বিক্রয় বা সেবন বা অশ্লীল কার্যক্রম করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির ও দন্ডে দন্ডিত করা হবে। মাজার মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মেলা উপলক্ষে এখন পর্যন্ত কোন আইন শৃঙ্খলা মিটিং এর আয়োজন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ২মে রোজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে আইনশৃঙ্খলা বিষয়কে কেন্দ্র করে বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলার বিএনপি’র সভাপতি অধ্যক্ষ মীর শাহে আলম, বক্তব্য রাখেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, ওসি শাহিনুজ্জামান শাহীন।এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন,বৈশাখী মেলার নামে আর উড়বেনা গাঁজার ধোঁয়া, চলবেনা অশ্লীল কার্যকলাপ তিনি আরও বলেন যার যার ধর্ম তারা ঠিক সেই ভাবে পালন করবে কোন প্রকার অশ্লীলতা, মাদক সেবন, জুয়ার আসর বসতে বা অশ্লীল কোন পুতুল নাচ চলতে দেওয়া হবে না। এ ধরনের কার্যকলাপের সাথে যদি কেউ জড়িত থাকে বা থাকলে আমি (ইউএনও) সেদিন নিজেই উপস্থিত থেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল জরিমানা করার ব্যবস্থা করবো। এসকল বিষয়ে কোন সুপারিশ গ্রহন করা হবে না বলে জানান তিনি। মেলাকে ঘিরে নতুন নতুন দোকানের কারন কোন রকমের যানযট যেন সৃষ্টি না হয় সে দিকেও নজর দিবেন বলে প্রশাসনের কাছে আশাবাদী স্থানীয় জনগন।
Leave a Reply